আজ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও ধুমকেতু পত্রিকার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে সেমিনার।

‘জয় বাংলা’, নজরুলের ধূমকেতু পত্রিকা থেকে পাওয়া: চবি’র উপাচার্য


অনলাইন ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ধূমকেতু পত্রিকার মধ্য দিয়ে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে বিদ্রোহের বাণী
ছড়িয়ে দিয়েছেন। ‘জয় বাংলা’ শব্দটি ধূমকেতু পত্রিকার মাধ্যমে পাওয়া যায়।’

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) চবি’র ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে ‘ধূমকেতু পত্রিকার শতবর্ষ: ফিরে দেখা’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সেমিনারটির আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রেম, দ্রোহ, সাম্য, মৈত্রী ও মানবতার কবি। তার কাছে জাতি ভেদাভেদ ও বৈষম্যের কোনো স্থান ছিল না। এ মহান কবি বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, সম্পাদক, চলচ্চিত্রকার ও গায়ক। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন নজরুল।

এজন্য সকলকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণায় অধিকতর মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান তিনি।

প্রসঙ্গক্রমে উপাচার্য বলেন, সাংবাদিকতার নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু নজরুল ধূমকেতু প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি তা মানেননি। তিনি ১৯২২ সালের ১৩ অক্টোবর ধূমকেতু পত্রিকার সংখ্যায় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চেয়েছেন।

আরও পড়ুন জাতীয় কবি কাজী নজরুলের মহাপ্রয়াণ দিবস

চবি নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড.মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। আলোচক ছিলেন চবি বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ ও দৈনিক আজাদী’র সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ।

সেমিনারে মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, সাংবাদিকতা নজরুলের একটি চরম বৈশিষ্ট্য ছিল। তারই একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটে ধূমকেতু পত্রিকা।

চবি বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধূমকেতুর সময়কালে ঘটনাগুলো অবলোকন করেন। নজরুল হুগলী জেলার জেলে বন্দি থাকাকালীন সময়ে বসন্ত নাটক রচনা করেন। সেই নাটকের নায়ক ছিলেন একজন কবি। পরবর্তীতে নাটকটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন এবং নজরুলকে অনশন ভাঙার জন্য জেলে টেলিগ্রাম পাঠান।

শিশু সাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী’র সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ বলেন, নজরুল সংবাদপত্রের প্রবাহমান ধারার বাহিরে গিয়ে ১৯২২ সালে ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করেন। এর আগে ১৯২১ সালে বিদ্রোহী কবিতা লেখার মাধ্যমে ভারত বর্ষে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। ধূমকেতু এবং বিদ্রোহী কবিতার মধ্যে তিনি একই কথা বলেছেন। যা ভারতের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ইঙ্গিত বহন করে। এটা নিয়ে নতুনভাবে গবেষণা করা উচিত।

আরও পড়ুন আইআইইউসি’তে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১২৪তম জন্মবার্ষিকী পালিত

অনুষ্ঠানের শুরুতে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন চবি সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনমুন বিনতে জলিল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চবি শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম মহাজন। অনুষ্ঠানে চবি’র বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, আইকিউএসি’র পরিচালক, কলেজ পরিদর্শক, বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর